দু;খ আমার জেনে গেলে না
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৬:২৪:৩৯ সকাল
একদিন গভীর রাতে দু:স্বপ্ন দেখে শিহাবের ঘুম ভাংগে। এক সমুদ্র ঘামের মধ্যে ভাসতে ভাসতে সে জেগে উঠে। স্বপ্নটা এতোটাই বাস্তব যে তার রেশ যেন শিহাবের সারা ঘরে ছড়িয়ে আছে.. তার প্রিয়া চলে যাচ্ছে তাকে ছেড়ে!
বুকের গভীরে চিনচিনে ব্যথাটা বাড়ে। পানি খায়। কিন্তু অস্থিরতা কমে না।
ঘড়ি দেখে শিহাব। রাত তিনটা।
জানালার পর্দা সরাতেই ঘরের ভেতর ঝাঁপিয়ে পড়ে জোছনা.. তাকে বলে দেয় ' পাহাড়ী বৃষ্টিতে আমার ভেজা হয়ে গেছে.. এখন কেবল আর একটা ইচ্ছেপূরণ বাকি। সে ও হয়ে যাবে। পাহাড়ী পূর্ণিমার তরল আগুনে পুড়ব বলে অপেক্ষায় আছি কখন গৃহত্যাগী জোছনা উঠে..।' শিহাবের চোখ ভিজে উঠে। তার কেবল মনে হতে থাকে এই জীবনে রুনার মিষ্টি মুখটি সে বুঝি আর দেখতে পাবে না!
ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে শিহাব। রুনার বাসার পথে এগোয়। গোকুলনগর থেকে সিএন্ডবি কম দূরে নয়। শিহাব যেন উড়ে চলে। যখন রুনার বাসার সামনে- ততোক্ষণে তার হাফ ছুটে গেছে। বাসার গেটে হেলান দিয়ে দাড়ায়। আকাশের পানে তাকায়। চিবুক সোজা করে।
হ্যা! রুনার রুমে ডিম লাইট জ্বলছে। ফ্যান ঘুরছে আর তাতে প্রবল ঝড় উঠেছে জানালার পর্দায়।
ঝড় শিহাবের বুকে ও। খুব কাছ থেকে, খুব সন্তর্পনে প্রিয়াকে দেখতে পেয়ে আবেগী ঝড়!! পকেট থেকে সেল ফোন বের করে শিহাব। কিছুক্ষণ পরিচিত নাম্বারটির ওপর হাত বুলিয়ে যায়.. যেন রুনার হৃদয়ের দুই অলিন্দেই তার ঘোরা হয়ে গেলো। নিশ্চিন্ত.. ক্লান্ত.. তবে একটা পরম নির্ভরতা অনুভব করছে। ওর প্রিয়া শান্তিতে ঘুমাচ্ছে! কি দরকার ওকে সেখান থেকে জাগানোর? সে যে এসেছিল সেটা সে নাই বা জানলো। আর ভালোবাসায় দেখানোটা কম- উপলব্ধিটা বেশী হওয়া উচিত।
যে পথ দিয়ে সে এসেছিল, চরম উদভ্রান্তের মত- মোবাইল পকেটে রেখে সেই পথ দিয়েই পায়ে পায়ে ফিরে যায় শিহাব।
জানালার পর্দা উড়ছে। তারই ফাক দিয়ে রুনা শিহাবকে চলে যেতে দেখে। একটা অপসৃয়মান ছায়ার মতো রুনাকে হৃদয়ে নিয়ে ফিরে গেল মানুষটা। দু:খগুলো কি শেয়ার করতে এসেছিল? এতো রাতে! তবে ওর দু:খগুলি কেন জেনে গেল না?
সে তবে কেন এলো? এলোই যখন ডাকল না কেন? মোবাইল বের করেও কেন ফোন করল না?
এতোগুলি কেন'র উত্তর কি কখনো জানা হবে??
ভাবতে ভাবতে রুনা নিজে এটা বিস্মৃত হয়- ঠিক এই সময়ে সে ও বা ঘুম থেকে উঠে জানালার পাশে কিসের জন্য দাড়িয়েছিল? প্রকৃতি আমাদের নিয়ে খেলা করে। অনেক রহস্য দেখিয়ে দেয়। আবার এমন অনেক সহজ কিছুও দেখতে দেয় না- ভুলিয়ে দেয়। এই ভুল-ভুলানি খেলার একটা মাত্র জায়গাই সে বেছে নিয়েছে, সকল অনুভূতির জন্ম হয় যেখানে- সেই হৃদয়ে! দু:খগুলো ও সুখগুলিকে জড়িয়ে থাকে.. নিরন্তর পাশাপাশি.. বড্ড কাছাকাছি!
বিষয়: সাহিত্য
৮৫৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
"ভালোবাসায় দেখানোটা কম- উপলব্ধিটা বেশী হওয়া উচিত।"
চির সত্য এই অনুভূতিটুকু বর্তমান আবহে ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে দিন দিন!
প্রকৃত ভালবাসার জয় হোক!!!
আপনি জানেন কি?
ভালো থাকুন।
...এতটুকু জানি-'অন্য রকম ভাল লাগা অনুভূত হয় আপনার সুন্দর নান্দনিক উপস্হাপনায় হাজির হতে পারলে!'
আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকেও ভাল রাখুন সব সময়,আমিন!
ভালো থাকুন। সব সময়।
সে দুঃখ শেয়ার করতে আসেনি। গল্পএর প্রথম ভাগেই তা উল্লেখ করা আছে প্রিয় ভাই।
আপনার অনুভূতির প্রতি অনেক ভালোবাসা জানবেন।
শুভ সকাল।
প্লিজ, কারো দিকে আর তাকিয়ে থাকা নয়, কেউ আসুক অথবা নাই আসুক, আপনি আসছেন, লিখছেন, ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করছেন, এটাই নিশ্চিত করুন!
অনেক সময়ে নেটের স্লথ গতি, আমার দুই জায়গায় অবস্থান হেতু লিখবার ও পোষ্ট করবার দীভাইসের অভাব- এসব কিছু মিলিয়ে আমি পারি না। গার্মেন্টস শিল্পের এক সামান্য চাকুরে আমি, সময়ের বড্ড অভাব আমার।
আমার জীবনের প্রথ লিখালিখির প্ল্যাটফর্ম এই ব্লগ। তাই আমি আজীবন আছি সাথে জানবেন।
ভালো থাকুন ভাই।
শুভ সকাল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন